মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য বিজয় এবং তার অর্থনৈতিক নীতিগুলি নিয়ে আলোচনা চলছে। তার নীতি গুলোতে উচ্চ শুল্ক, কর ছাড়, এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন, তার পরিকল্পনাগুলোর প্রধান দিকগুলো একনজরে দেখি।
১. আমদানির উপর উচ্চ শুল্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের উপর ৬০% এবং অন্যান্য আমদানির উপর ২০% শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছেন। এই শুল্ক নীতির প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করা এবং বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভরতা কমানো।
কীভাবে ভোক্তারা প্রভাবিত হবেন?
উচ্চ শুল্কের ফলে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়বে, যার ফলে সাধারণ ভোক্তাদের খরচ বেড়ে যাবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি $৪০ ডলারের টোস্টার ২০% শুল্কের কারণে $৪৮-এ পৌঁছাতে পারে। অর্থাৎ, ক্রেতারা আগে যেখানে কম দামে পণ্য কিনতে পারতেন, সেখানে শুল্কের কারণে তাদের বেশি খরচ করতে হতে পারে।
২. কর ছাড়ের প্রস্তাব
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, কর ছাড় অব্যাহত রাখা হবে, যা ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা। উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের জন্য করের হার কমানো এবং বড় ব্যবসার জন্য কর ছাড়ের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর প্রভাব কী হবে?
এই পদক্ষেপ উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের এবং বড় ব্যবসায়ের জন্য উপকারী হবে, তবে এতে জাতীয় বাজেটে ঘাটতি বৃদ্ধি পেতে পারে। বাজেটের এই ঘাটতি দীর্ঘমেয়াদে সাধারণ জনগণের উপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তার মতো খাতে বাজেট কমে আসতে পারে।
৩. অভিবাসন নীতি ও শ্রমবাজারের উপর প্রভাব
অভিবাসনের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করাও ট্রাম্পের নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি বিশেষ করে নির্মাণ খাতে শ্রম সংকট সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে অনেক অভিবাসী কাজ করেন।
গৃহনির্মাণ খাতে প্রভাব
যদি অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যা কমে যায়, তবে নির্মাণ খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে বাড়ির মূল্যও বাড়তে পারে। বিশেষ করে হাউজিং সেক্টরে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে, কারণ সেখানে অভিবাসী শ্রমিকদের গুরুত্ব অপরিসীম। দীর্ঘমেয়াদে এই সংকটের ফলে মার্কিন অর্থনীতি উচ্চ খরচের মুখোমুখি হতে পারে।
শেষ কথা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি মার্কিন অর্থনীতির জন্য একটি মিশ্র প্রভাব আনতে পারে। উচ্চ শুল্ক ভোক্তাদের খরচ বাড়াতে পারে, কর ছাড়ের কারণে জাতীয় বাজেট ঘাটতি বাড়তে পারে, এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের ফলে শ্রম সংকট দেখা দিতে পারে। তবে, এই পদক্ষেপগুলো আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে এবং স্থানীয় উৎপাদনকে উত্সাহিত করতে সহায়ক হতে পারে।
আপনার মতামত কী?
এই নীতিগুলো কীভাবে মার্কিন অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে বলে আপনি মনে করেন? আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না!