১. অনলাইনে আবেদন করার সুবিধা
বর্তমানে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা নিতে জনগণকে অনেক দৌড়ঝাঁপ করতে হয়। একাধিক অফিসে যাওয়া, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা ইত্যাদি সাধারণ সমস্যা। ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে, এখন সেবাগ্রহীতা অনলাইনে যে কোনো ভূমি সেবা (নামজারি, জমাভাগ, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন) আবেদন করতে পারবেন। এতে তারা কোনো অফিসে না গিয়ে, সহজে এবং দ্রুততার সাথে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা পেতে পারবেন।
প্রভাব: সময়ের সাশ্রয়, গন্তব্যে পৌঁছানোর ঝামেলা কমবে এবং প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে।
২. অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম
ভূমি উন্নয়ন কর, জমা ফি, এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ফি অনলাইনে পরিশোধ করার ব্যবস্থা হবে। এটি পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে সম্পন্ন হবে, এবং প্রমাণপত্রের নিশ্চয়তা এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
প্রভাব: নগদ অর্থের লেনদেনের ঝামেলা এবং সময়ের অপচয় কমে যাবে। এছাড়া, পেমেন্ট সিস্টেমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং অনলাইনে পেমেন্ট করার ফলে মানুষের আর্থিক লেনদেন সহজ হবে।
৩. ওয়ান-স্টপ সার্ভিস
ভূমি নিবন্ধন, নামজারি, জমাভাগ, মৌজা ম্যাপ এবং অন্যান্য রেকর্ড সংশোধন সম্পর্কিত সেবাগুলি এখন একক প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে। এতে প্রাপ্ত সেবার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা অফিসকে দ্রুত খুঁজে বের করা যাবে।
প্রভাব: জনগণের জন্য সেবা পেতে গেলে একাধিক জায়গায় যেতে হবে না। এক জায়গাতেই সব কাজ সম্পন্ন হওয়া সম্ভব হবে।
৪. সরল প্রক্রিয়া: নামজারি, জমাভাগ, মিউটেশন
নামজারি বা জমাভাগের প্রক্রিয়া বর্তমানে অনেক জটিল ও সময়সাপেক্ষ। ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে এটি সরলীকৃত হবে। এটি বিশেষত, ওয়ারিশদের মধ্যে হিস্যা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
প্রভাব: পেপারওয়ার্ক এবং অফিসের দীর্ঘ প্রক্রিয়া কমে যাবে। স্বচ্ছতা বাড়বে এবং সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে আস্থাও তৈরি হবে।
৫. ভূমির মালিকানা/স্বত্বের ইতিবৃত্ত
জনগণ তাদের ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত ইতিহাস অনলাইনে জানাতে পারবেন, যা পূর্বে সম্ভব ছিল না। এতে কোনো ভূমি সংক্রান্ত ঝামেলা বা বিরোধে আইনগত প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
প্রভাব: ভূমি সংক্রান্ত আইনি বিরোধ দূর হবে, ভূমির মালিকানা সঠিকভাবে প্রমাণ করা যাবে এবং অস্পষ্টতা কমবে।
৬. ভূমির দাগের ইতিবৃত্ত
ভূমির দাগ বা ক্যাডাস্ট্রাল রেকর্ডের ইতিবৃত্ত অনলাইনে পাওয়া যাবে। এতে জনগণ সহজেই জানতে পারবেন তাদের ভূমির ইতিহাস এবং বৈধতা।
প্রভাব: ভূমি সংক্রান্ত তথ্য দ্রুত, সহজ এবং নির্ভুলভাবে পাওয়া যাবে, যা বিভ্রান্তি ও বিরোধের ঝুঁকি কমাবে।
৭. অধিগ্রহণকৃত জমির তথ্য এবং ক্ষতিপূরণ
জমি অধিগ্রহণের পর ক্ষতিপূরণ বিষয়ক সব তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাবে। ক্ষতিপূরণ পেতে কীভাবে আবেদন করতে হবে এবং এর পরিপূর্ণ প্রক্রিয়া অনলাইনে জানা যাবে।
প্রভাব: ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে এবং জনগণ দ্রুত তাদের পাওনা পেতে সক্ষম হবে।
৮. রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা এবং রাজস্ব আদায়
রেন্ট সার্টিফিকেট সম্পর্কিত মামলা ও তার উপাত্ত অনলাইনে থাকবে। এটি সরকারের রাজস্ব আদায়ে সহায়তা করবে এবং মামলার জট কমাবে।
প্রভাব: সরকারের রাজস্ব বাড়বে, এবং জনগণের মামলা সংক্রান্ত সমস্যাও দ্রুত সমাধান হবে।
৯. খাসজমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া
খাসজমি বন্দোবস্তের প্রক্রিয়া সফটওয়্যার ভিত্তিক হবে। এর মাধ্যমে সহজেই খাসজমি সম্পর্কিত আবেদন, মূল্যায়ন এবং বন্দোবস্ত সম্পর্কিত কাজগুলো সম্পন্ন হবে।
প্রভাব: খাসজমি নিয়ে জমি বিতর্ক কমবে এবং বিষয়টি আরও স্বচ্ছ ও কার্যকরী হবে।
১০. সায়রাত মহাল ইজারা ব্যবস্থাপনা
সায়রাত মহাল (সরকারি জমির ইজারা) অনলাইনে পরিচালিত হবে, যার ফলে ইজারা প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
প্রভাব: জমির ইজারা বিষয়ে ম্যানিপুলেশন বা দুর্নীতি কমবে, এবং জনগণের জন্য সুযোগ আরও সুস্পষ্ট হবে।
১১. ভূমির মালিকানা নিরাপত্তা
ভূমির মালিকানা সুরক্ষা পাবে ডিজিটাল রেকর্ড সিস্টেমের মাধ্যমে। কোনো ব্যক্তি তাঁর ভূমির মালিকানা আইনগতভাবে প্রমাণ করতে পারবে।
প্রভাব: মালিকানা নিয়ে বিতর্ক কমে যাবে এবং ভূমির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
১২. দুর্ভোগ ও হয়রানি কমবে
এখন থেকে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে জনগণকে বিভিন্ন অফিসে দৌড়াতে হবে না। সবকিছু অনলাইনে সমাধান হবে, ফলে হয়রানি কমবে।
প্রভাব: জনগণের দুর্ভোগ কমবে এবং জমি সেবা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হবে।