বাংলাদেশের ১৯৭১ এবং ১৯৭২ সালের সংবিধান দুটি ভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছিল। এখানে প্রধান পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:
১. ১৯৭১ সালের সংবিধান
- অস্মিতা ও স্বাধীনতা: এটি মূলত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর প্রণীত হয়েছিল এবং এর মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা ও জাতীয় অস্মিতার প্রতিফলন।
- শাসন ব্যবস্থা: এই সংবিধানে শাসন ব্যবস্থার বর্ণনা ছিল অস্থায়ী, কারণ এটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধান হিসেবে গণ্য হয়নি।
- মৌলিক অধিকার: মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে সেগুলি অনেক সময় লঙ্ঘিত হয়েছিল।
২. ১৯৭২ সালের সংবিধান
- ফরমাল স্বীকৃতি: এটি বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী সংবিধান, যা ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গৃহীত হয়। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে।
- গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ: এই সংবিধানে গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়, মানবাধিকার, এবং আইনের শাসনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
- মৌলিক অধিকার: মৌলিক অধিকার এবং নাগরিকের অধিকারগুলোর একটি বিস্তৃত তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যা রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল।
- কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামো: এটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামো ও কার্যপ্রণালী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, যা পূর্ববর্তী অস্থায়ী সংবিধানে ছিল না।
সারসংক্ষেপ
১৯৭১ সালের সংবিধান একটি অস্থায়ী এবং মুক্তিযুদ্ধের পরের পরিস্থিতিতে তৈরি হয়েছিল, যেখানে ১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল একটি স্থায়ী আইন ও রাষ্ট্রের কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। ১৯৭২ সালের সংবিধান মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠিত করার দিকে নির্দেশিত ছিল।